Archive for ‘গল্প / ভাবনা’

November 3, 2021

হৃদয় ভরা আকাশ – ইমরান মাহমুদ

ছেলেবেলার কথা বলি, তখনও দস্যিপনা আর পাকাপাকা কথা বলতে শিখিনি। সমবয়সী ছেলেগুলোর চাইতে অনেকটা হাবাগোবাই ছিলাম। মানুষ যা বলতো, একটু দেরি করে বুঝতাম। স্কুলে ক্লাস ওয়ানে নতুন ভর্তি হলাম, কাউকে চিনি না। সবাই যখন এর-তার সাথে খেলছে, আমি তখন চুপচাপ এক কোণায় বসে ভাবতাম, কি করা যায়। কারো সাথে নিজে গিয়ে বন্ধুত্ব করবো, সেটাও সাহসে কুলাতো না।

একদিন টিফিন টাইমে সাহস করে ওদের সাথে খেলতে গেলাম। ওরা খেলছিল ‘টিলো এক্সপ্রেস’ জাতীয় কি জানি একটা খেলা, অর্থাৎ সবাই লুকাবে, আর কেউ একজন খুঁজে বের করবে। সবাই কাছাকাছিই লুকায়, যেন তাড়াতাড়ি কেউ খুঁজে বের করতে পারে। আমি তো কম বুঝতাম, চলে গেলাম স্কুলের বিশাল মাঠ পাড়ি দিয়ে ঐ পাশের স্কুলের মসজিদে। কিন্তু ওদিকে কেউ তো আর আমাকে খুঁজতে আসেনা! পুরো টিফিন পিরিয়ড সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম, কেউ আসলো না। ঘন্টা দেয়ার পর চুপচাপ এসে ক্লাসে বললাম।

আরেকদিনের কথা, স্কুলের ড্রইং ক্লাসে ম্যাডাম কোনো একটা ফলের ছবি আঁকতে দিয়েছেন। আমরা সবাই আঁকছি, আঁকা শেষে ম্যাডামকে দেখালে উনি সেখানে নাম্বার দিয়ে দিচ্ছেন। সবাইকেই দশে সাত-আট এরকম দিচ্ছেন। আমার খাতায় লিখলেন ‘V. Good’, এর মানে হলো ভেরি গুড, কিন্তু আমি সেটা জানতাম না। সেদিন ভয়ে বাসায় খাতাই দেখাইনি, পরদিন ড্রইং ক্লাসে আরেকটা ফলের ছবি আঁকতে দিলেন, এবারো আমার খাতায় লিখলেন ‘V. Good’। অবশেষে দুই দিন পরে ভয়ে ভয়ে বাসায় খাতা দেখালাম, এমনই বোকা আমি!

এবার বাবার কথা বলি, অন্য কেউ হলে হয়তো হালই ছেড়ে দিতো, কিন্তু এইরকম হাবাগঙ্গারাম ছেলের ওপর কেন যেন কখনোই আস্থা হানাননি তিনি। ছেলেবেলায় যেখানেই আমাকে নিয়ে যেতেন, বলতেন, ওকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবো। বাসায় কোন খুটখাট করলে আদর করে ডাকতেন, এই যে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব, এদিকে আসেন!

যে বয়সে সবাই ছোঁয়াছুয়ি আর কুমির-কুমির খেলে বেড়াতো, আমি সেই বয়স থেকেই বইয়ের পোকা। স্কুল থেকে ফেরার পথে প্রায়ই নীলক্ষেত যেতাম। তারপর ফুটপাথের প্রতিটা দোকান আঁতিপাতি করে বই বাছতাম। পছন্দ হলে মনে মনে ঠিক করে রাখতাম, কিছুদিন টিফিনের পয়সা জমিয়ে সেই বইটা কিনতাম। একবার স্কুলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মেলা হচ্ছিল। একটা বই খুব পছন্দ হলো, চার্লস ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেকটেশন্স’ এর বাংলা অনুবাদ। আমার কাছে টাকা নেই, পকেটে ছিল স্কুলের বেতনের টাকা, সেটা দিয়েই কিনে ফেললাম।
ছুটির পর আমাকে নেয়ার জন্য বাবা আসলে তাকে জানালাম, বাবা কিছুই বললেন না। তবে আগে থেকে না জানিয়ে খরচ করাতে হালকা বকুনি দিলেন। বাবা রাগ করলেন কিনা বুঝলাম না।

এর কিছুদিন পরের কথা, বাবার কিছু বন্ধু বাসায় এলেন, কথায় কথায় বাবা বললেন, ‘তোমরা এটাও পড়োনি!, অথচ আমার ছেলে এই বয়সেই ‘গ্রেট এক্সপেকটেশন্স’ পড়ে ফেলেছে।’ আড়াল থেকে সেকথা শুনে বুঝতে পেরেছিলাম বাবা আসলে কত খুশি হয়েছিলেন।

স্কুল জীবনের শেষদিককার কথা, বোধহয় টেন এ পড়ি। একুশে টিভি তখন টেরিস্ট্রিয়াল ছিল, ডিশ লাইন ছাড়াই দেখা যেত, সেখানকার কুইজ শো ‘জানা অজানা’ তে অংশ নেবে আমাদের স্কুল। আমি আর আমাদের ক্লাস ক্যাপ্টেন শো এর জন্য নির্বাচিত হলাম। টানা দুই দিন শুটিং হলো কুইজ শো এর। পুরো দুইটা দিনই বাবা আমার সাথে ছিলেন। এক একটা রাউন্ড শেষ হতো, দেখতাম বাবা এক বোতল পানি, অথবা একটা স্যান্ডউইচ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মাঝে মাঝে বিরতিতে কারেন্ট চলে গেলে পাখা দিয়ে বাতাস করতেন, কোত্থেকে যে পাখা যোগাড় করতেন কে জানে। সেখানে নামাযের ব্যবস্থা ছিলনা, নামাযের সময় হলে বাবা ঘুরে ঘুরে জায়গা খুঁজে বের করতেন। এমনও সময় গিয়েছে, অডিটরিয়ামের এক কোনায় ছেঁড়া পোস্টারের ওপর আমরা দুইজনে নামায পড়েছি। চ্যাম্পিয়নের ট্রফিটা হাতে নিয়ে আমার মনে হয়েছিল, এ ট্রফিটা বাবারই প্রাপ্য। আমার মত বোকাসোকা আর নির্বোধ টাইপের একটা ছেলের ওপর যে আস্থা রেখে এতদূর নিয়ে আসতে পারে, সে ই তো আসল বিজয়ী।

আমার ছোটবেলার তুচ্ছ ঘটনাগুলো মনে করে বাবা এত মজা পেতেন যে বলার মত নয়। ছোটবেলায় আমি কিভাবে মাথার ওপর বালিশ নিয়ে ‘লেবু লেবু’ বলে ফেরিওয়ালা সাজতাম, সেটা প্রায়ই বাবা খুব আগ্রহ নিয়ে অভিনয় করে দেখাতেন। আর আমি তখন লজ্জায় লাল হতাম।

বাবার শেষবেলায় বাবার সাথে থাকার সুযোগ আমার হয়েছিল। অফুরান প্রাণশক্তি আর কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর আমার বাবাটাকে কিছুতেই বিছানায় শোয়া অবস্থায় মেলাতে পারতাম না। মনে হতো, এই বুঝি উঠে বলবেন, কইগো, জুতাটা দাও, একটু বাইরে যেতে হবে’।

নিজে কষ্টে থেকেছেন, কিন্তু আমাদের লেখাপড়ায় কখনোই ঘাটতি হতে দেননি। ছেলেমেয়েদের প্রতি অসম্ভব আস্থা আর বিশ্বাস ছিল তাঁর। অনেক ভুল করেছি, কিন্তু বাবা সবসময় পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, বিশ্বাস রেখেছিলেন যে তার ছেলেমেয়েরা পারবে। অন্য সবাই যেখানে নিশ্চিত হাল ছেড়ে দিতো, বাবা সেখানেও ভাবতেন, পারলে আমার ছেলেমেয়েরাই পারবে। আকাশের মত বিশাল হৃদয় না হলে এ সম্ভব নয়।

আব্বু, এখন কেউ আর তোমার মত বলে না, ‘এই যে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব, এদিকে আসেন।’, আমার বিশ্বাস তুমি অনেক ভাল আছো। তোমার ছেলে এখন সত্যিকারের ইঞ্জিনিয়ার হবার পথে, কিন্তু সেটা দেখার জন্য তুমি নেই। আকাশের মত বিশাল হৃদয়ের তোমাকে খোঁজার জন্য তাই মাঝে মাঝে আকাশের দিকেই তাকাই….

(রচনাকালঃ মার্চ, ২০১২)

October 28, 2017

আমি মাসুদ রানার ছোট ভাইকে দেখেছি!

মূল লেখার লিংক
আমি মাসুদ রানার ছোট ভাইকে দেখেছি!

আমি মাসুদ রানার ছোট ভাইকে দেখেছি। সত্যি বলছি, আমি দেখেছি তাকে। মাসুদ রানার একটা গল্পে পড়েছিলাম একটা বুলেট মাসুদ রানার হৃদপিণ্ডে গিয়ে বেধেঁ। কিন্তু সে মারা যায় না, কারণ বুলেটটি তার হৃদপিণ্ডের ইন্টারভেন্ট্রিকুলার সেপটামে বিধেঁ ছিল, কোন মেজর ব্লিডিং ছাড়াই রানা সেবার বেঁচে যায়। গত ২৪.১০.১৭ তারিখে যে বালকটির সাথে আমার পরিচয় হয় তাকে মাসুদ রানার ছোট ভাই বললে ভুল বলা হবে না।

ডিউটি করছি ঢাকা মেডিকেল ক্যাজুয়ালটিতে। টানা ২৪ ঘন্টা ডিউটির মাত্র সাড়ে ৫ ঘন্টা গেছে।

read more »

September 22, 2017

সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বুক রিভিউ’

মূল লেখার লিংক

বই কি শুধুমাত্র পড়ার জন্য? কিংবা বই কি শুধুমাত্র নির্মল আনন্দ লাভের জন্য? এমনও তো হতে পারে বই অলস সময়ের সময় ক্ষেপণের হাতিয়ার। এরকম অনেকভাবেই বইকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। বইকে আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু বই যেন আপনাকে যত্রতত্র ব্যবহার না করতে পারে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা অতীব গুরত্বপূর্ণ ব্যাপার।

read more »

September 4, 2017

মনসবদার জায়গিরদার

মূল লেখার লিংক
মনে করেন মোগল আমল। ঝিরিঝিরি বাতাস। বড় চাচা দূর কাবুল থেকে সফর শেষ করে এসে মাথায় হাত বুলায় কইলেন এই নাও বাছা মিষ্টি খাও। আখরোট খাও। কতদিন পরে দেখা। পড়াশোনা কেমন চলছে? বড় হয়ে কি হবে ঠিক কি করেছ?

আপনি কি বলবেন… ডাক্তার হতে চাই? আশিব্বাদ করেন চাচাজান যেন সফটওয়্যার ডেভেলপার হতে পারি? ধুর না। আপনি কইবেন বড় মানুষ হইতে চাই। নামজাদা ব্যক্তি। চার মহলা দালান। শুক্রবারে খাসির বিরিয়ানি। পায়ের উপর পা তুলে সুখে বসবাস। অতএব আপনি বলবেন মনসবদার হতে চাই। জায়গিরদার হতে চাই চাচা দোয়া রাইখেন।

চলেন পাঠক আজ তাহলে মনসবদারি জায়গিরদারি ফানাফানা করে দেখি। তারা কি সত্যই চার মহলা দালানে থাকত এবং শুক্রবারে খাসির বিরিয়ানি খেত? তাদের জমা-হাসিল গরমিল কি কারণে? জাট এবং সওয়ার কি বস্তু? মাশরুত খায় না মাথায় দেয়? চৌধুরী আর কানুনগো কে?

মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছে না কেউ জবাব তার। বিষম চিন্তা।

read more »

August 27, 2017

সিকিমের স্বাধীনতা হারানোর উপাখ্যান

মূল লেখার লিংক
দেশ কী? কখনো মনে হয়, হয়তো স্রেফ মানচিত্রে দাগ টানা সীমারেখা বা জোর করে চাপিয়ে দেয়া কাঁটাতারের নামই দেশ। কিন্তু পরক্ষণেই দ্বন্দ্বে পড়ে যেতে হয়। এ সীমারেখার মধ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জনের জন্য যুগে যুগে কত রক্তপাত, কত না বলিদানই হয়েছে। ‘সার্বভৌমত্ব’, ‘স্বাধীনতা’- এ শব্দগুলো যেন প্রাণের সবটুকু উচ্ছ্বাস ধারণ করে থাকে।

ইতিহাসের পাতায় অনেক জাতি যেমন স্বর্ণাক্ষরে নিজেদের স্বাধীনতা অর্জনের গল্প লিখেছে, তেমনি এর পাশাপাশি কালো হরফে লেখা স্বাধীনতা হারানোর অধ্যায়ের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন দেশের কথা বলতে গেলেই চলে আসে সিকিমের নাম।

মাত্র ৭,০৯৬ বর্গ কিলোমিটারের ছোট্ট দেশ সিকিমের জনগণও স্বাধীনতা চেয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা যখন উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়, তখন সিকিমে ‘ভারতের সাথে তারা যুক্ত হতে ইচ্ছুক কিনা’ এ প্রশ্নে গণভোট হয়েছিল। সিকিমের জনগণ প্রত্যাখ্যান করে এ প্রস্তাব। কিন্তু এরপর তিরিশ বছর না পেরোতেই এক বিশ্বাসঘাতক, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর কূটচাল ও সিকিমের রাজার সরলতায় সিকিম হয়ে ওঠে ভারতের প্রদেশ।

সিকিমের ভারতের প্রদেশ হয়ে ওঠার সফরটা বুঝতে হলে একটু ব্রিটিশ-ভারতের সময়ে ফিরে তাকানো দরকার। ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিকিমের উপর আধিপত্যবাদীদের লোভাতুর দৃষ্টি ছিল সবসময়ই। উনবিংশ শতকের প্রথম দিকে প্রতিনিয়ত নেপালের গোর্খা রাজ্যের হামলায় উৎকণ্ঠিত ছিল সিকিম। গোর্খা রাজ্য হামলা চালাত সংলগ্ন ব্রিটিশ ভারতের রাজ্যগুলোতেও। তাই সহজেই সে সময় সিকিম ও ব্রিটিশ রাজ গোর্খাদের বিরুদ্ধে এক কাতারে দাঁড়িয়ে যায়। এরপর ১৮১৪ সালে শুরু হওয়া ব্রিটিশ-নেপাল যুদ্ধে নেপাল পরাজিত হয়। আর এক চুক্তি অনুসারে সিকিম ফিরে পায় নেপাল অধিকৃত তার অংশগুলো।


এ চুক্তির ফলে নেপাল অধিকৃত অংশগুলো ফিরে পায় সিকিম

read more »

August 25, 2017

পূজা চৌহানের অদ্ভুত ‘ধনী পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপনের যে দুর্দান্ত উত্তর দিয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি

মূল লেখার লিংক
পাত্র-পাত্রী চাই শিরোনামের বিজ্ঞাপনগুলো খুব একটা অপরিচিত নয় আমাদের কাছে। হরহমেশাই তো দেখে যাচ্ছি। তাহলে পূজা চোহান অনলাইন ফোরামে পাত্র চেয়ে কী এমন চাহিদাপত্র পেশ করেছিলেন যার উত্তর দিলেন স্বয়ং মুকেশ আম্বানি, আর আলোড়ন উঠলো অনলাইন দুনিয়ায়? উত্তরটাই বা কী ছিল? মুকেশ আম্বানি ও পূজা চৌহানের নামে এই ঘটনা প্রচলিত থাকলেও নানা সূত্র থেকে জানা যায় পাত্র চাই বিজ্ঞাপনটি আমেরিকার বিখ্যাত ক্লাসিফায়েড বিজ্ঞাপনের ওয়েবসাইট ক্রেইগলিস্টে দিয়েছিলন মিস প্রীতি ও এর উত্তর দিয়েছিলেন জে পি মরগানের সিইও। তবে এরও সত্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকায় গল্পটি আমরা পূজা ও মুকেশ আম্বানির নামেই প্রকাশ করছি। কারণ পাত্র-পাত্রী এখানে মূখ্য নয়, মূখ্য গল্পের উপদেশপত্রটি।
Mukesh

read more »

July 30, 2017

মানসিকভাবে শক্তিশালী মানুষ যে দশটি কাজ অবশ্যই করবে না

মূল লেখার লিংক
আমরা প্রতিনিয়তই শক্তিশালী এবং সুস্থ দেহ প্রত্যাশা করি। কর্মক্ষম থাকার জন্য শারীরিক কসরত করি। শরীরের পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজনে ভালো খাবার খাই এবং শরীরের প্রয়োজনেই আবার অনেক কিছু এড়িয়েও চলি। কিন্তু শারীরিক শক্তিমত্তার সাথে সাথে মানসিক সুস্থতা, মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য করণীয় কাজগুলো আমাদের করা হয়ে ওঠে না। আমাদের সফলতা, সুখী থাকা, জীবনটাকে স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে নিয়ে চলার পুরো ব্যাপারটি যে মানসিক শক্তিমত্তার উপর নির্ভর করে, সে ব্যাপারে আমদের কোনো ধারণাই নেই।

read more »

June 10, 2017

আমাদের চর্যাপদ : একটি সরল আলোচনা

মূল লেখার লিংক
চর্যাপদ নিয়ে প্রথম এবং চরমতম কথা হলো, এটা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম, এবং বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগের একমাত্র নিদর্শন। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগের এই একটাই নিদর্শন পাওয়া গেছে। তবে তার মানে এই নয়, সে যুগে বাংলায় আর কিছু লেখা হয়নি। হয়তো লেখা হয়েছিল, কিন্তু সংরক্ষিত হয়নি। কেন হয়নি, সেটা পরের আলোচনা।

Charyapada

আমাদের চর্যাপদ

চর্যাপদ রচিত হয় ৮ম থেকে ১২শ শতকের মধ্যে। এর মধ্যে ঠিক কোন সময়ে চর্যাপদ রচিত হয়, তা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। একেকজন একেক সময়কালের কথা বলেছেন। অনেক দাবি করেছেন, এর রচনাকাল আরও আগে। তবে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য মত এটাই।

read more »

June 9, 2017

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের ৩০টি মজার ঘটনা

মূল লেখার লিংক
কবি কাজী নজরুল ইসলামের রসবোধ সম্পর্কে তার লেখনীর মাধ্যমে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। কবিকে যারা ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন, তারা সকলেই মুগ্ধ হতেন তার ভীষণ আয়েশী আড্ডাবাজ স্বভাব এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে খোশমেজাজে থাকতে পারার দুর্দান্ত ক্ষমতায়। আজ ২৫ মে কবির জন্মদিন। চলুন জেনে নেয়া যাক কবির জীবনের অনেক হাস্যরসপূর্ণ ঘটনার মধ্যে কয়েকটি।

u

read more »

June 9, 2017

বীরেন ভট্টের অমরত্ব

মূল লেখার লিংক
ঝাঁক-ঝাঁক টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তথ্যমন্ত্রী বললেন—’বীরু আমার ছোটবেলার বন্ধু। আমরা একই মাটিতে বড় হয়েছি, একই ইশকুলে পড়েছি। ভীষণ দুষ্টু আর ডানপিটে ছিল বীরু। বীরু আজ মৃত্যুপথযাত্রী। ওর আগে কেন আমার মরণ হলো না? এত বড় একজন কবিকে হারাবার শোক কী করে বইবে দেশ?’ ইত্যাদি-ইত্যাদি বলতে-বলতে মন্ত্রীর ডান চোখ থেকে একফোঁটা, বাঁ চোখ থেকে আধফোঁটা—সাকুল্যে দেড়ফোঁটা অশ্রু মহাসমারোহে ঝরে পড়ল। অশ্রুর ছবি মুহূর্তে বন্দি হলো শত-শত ক্যামেরায়। গণমাধ্যমে মন্ত্রীর এই দেড়ফোঁটা অশ্রুর মূল্য এই মুহূর্তে দেড় কেজি হীরের চেয়ে বেশি। এই অশ্রুকে যে সাংবাদিক যত শৈল্পিকভাবে ধারণ করতে পেরেছেন, তার পদোন্নতির প্রাবল্য তত বেশি।

biruuuu

read more »

March 8, 2017

বুবুর সঙ্গে সারা দুপুর

মূল লেখার লিংক

বড়বোনের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর মজাই অন্যরকম। তা সে ছোট বোনের বয়স দশ হোক কী চল্লিশ! প্রবাসজীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ হচ্ছে, বড়বোনদের সঙ্গে আমার কদাচিৎ দেখা হওয়া। একসঙ্গে বেড়ানোর সুযোগ তো অনেক দূরের কথা। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, এই চর্মচক্ষুর দেখা না হওয়া আমাদের কঠিন ভালোবাসাকে এতটুকুও হালকা করতে পারে না।

read more »

March 5, 2017

দূরত্ব কি হতে পারে ভালোবাসার অন্তরায়?

মূল লেখার লিংক
প্রেম, স্বর্গ থেকে নেমে আসা মর্ত্যের এক বিশেষ উপহার। সবাই নিজের এই বিশেষ সম্পর্কটির কথা খুব রূপকথার মতো করে মনের মধ্যে সাজায়। কেউ কেউ মনের আঙিনায় আসন্ন সম্পর্কের ‘নীল নকশা’ও করে ফেলে। কিন্তু কেউই কখনো তাদের কল্পনায়, তাদের সেই নীল নকশায় ‘দূরত্ব’ শব্দটিকে স্থান দিতে চায় না। সবাই কাছাকাছি থাকতে চায়, দূরত্ব কারো সয় না!

সঙ্গীর জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাওয়া যেন একটি অলিখিত চুক্তির মতন। “তার সময়ের সবচেয়ে বেশি অংশ তো আমারই পাবার কথা”, এমনটিই ভাবনা অধিকাংশের। এখন এসব রূপকথার মতো ভাবনার মধ্যে যদি এসে দাঁড়ায় দূরত্ব, সময়ের সবটুকু পাবার বদলে যদি মাসে কিংবা দু’তিন মাসেও একবার দেখা না হয় প্রিয় মানুষটির সাথে, তখন কী হয়? আপনি কি যত্ন নেয়া ভুলে যাবেন? আপনি কি তার সাথে সুখ-দুঃখ ভাগ করা ছেড়ে দেবেন? ঐ বিশেষ ব্যক্তিটি কি তখন আর আপনার প্রিয়ের তালিকায় শীর্ষে থাকবেন না? আপনি কি তখন আর মন উজাড় করে ভালোবাসবেন না? অনেক প্রশ্ন এক কাতারে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু উত্তরগুলো প্রশ্নের চেয়েও অনেক বেশি সহজ।

হোক না এখানে রাত ওখানে দিন, তাতে কিছু এসে যায় না!, http://www.pixastock.com

read more »

February 22, 2017

চেতন ভগতের সাড়া জাগানো যত উপন্যাস

মূল লেখার লিংক
ভারতের নবীন লেখকদের মধ্যে অন্যতম একজন তিনি, খুব দ্রুতই তার লেখা বইগুলো বেস্ট সেলার উপাধি পেয়ে যায়। কেন? তার সহজ ইংরেজিতে তরতর করে এগিয়ে যাওয়া গল্পগুলোর জন্য। বলছি চেতন ভগতের কথা, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস যাকে বলেছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রীত ইংরেজি উপন্যাসের রচয়িতা। টাইম ম্যাগাজিনের মতে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে একজন। তার খ্যাতির কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি যে ক্ষেত্রকে দেয়া যায়, তা হলো তার উপন্যাসগুলো, যা থেকে অধিকাংশই চলচ্চিত্রের পর্দায়ও দেখা গিয়েছে। আজ সেগুলোর সম্পর্কেই কিছুটা জানতে যাচ্ছি আমরা।
ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান (২০০৪)

ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান, quotesaga.com

read more »

February 22, 2017

‘ইন্ট্রোভার্ট’: সম্ভাবনার অপর নাম

মূল লেখার লিংক
‘ইন্ট্রোভার্ট’ বা ‘অন্তর্মুখী’ শব্দটির একটি বিশেষ তাৎপর্য আছে। এই শব্দটি আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করে থাকি। ইন্ট্রোভার্টের সাথে আরেকটি শব্দ আমরা সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করি, আর তা হলো ‘লাজুক’। মূলত ইন্ট্রোভার্ট হলেই যে লাজুক হতে হবে তার কোনো মানে নেই। ইন্ট্রোভার্ট ব্যক্তি নিজের মধ্যে নিজে চিন্তা করতে ভালবাসে। বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে ভালবাসে। গল্প আড্ডায় সময় না কাটিয়ে বই পড়া, লেখালেখি, আঁকাআঁকি বা এই ধরনের সৃষ্টিশীল কাজে ব্যস্ত থাকতে তুলনামূলকভাবে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে।

ইন্ট্রোভার্ট মানে কথা কম বলা শুধু নয়

read more »

February 16, 2017

একুশে বইমেলার গৌরবময় ইতিহাস

মূল লেখার লিংক
মুক্তধারা প্রকাশনীর কর্ণধার চিত্তরঞ্জন সাহা এক টুকরো চটের উপর কয়েকটি বই সাজিয়ে যে মেলার সূচনা করেছিলেন, সেই মেলা আজ পুরো জাতির দর্পণের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুটপাতে চটের উপর যে মেলা শুরু হয়েছিল, সেই মেলায় আজ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শত শত বর্ণিল স্টল, দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষের ঢল এবং দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান হিসেবে এটি নিজের অবস্থান গড়ে নিয়েছে। এই মেলার একটি গৌরবময় ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করছি এখানে।

উত্তাল দেশ এবং চটের উপর শুরু

বাংলাদেশে তখন যুদ্ধের যন্ত্রণা চলমান। অনেক বিশিষ্ট লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিককে শরণার্থী হিসেবে কলকাতায় অবস্থান করতে হয়েছিল। দেশের জন্য ভালো কিছু করার অপরাধে তাদের সকলের কারাবাসের শাস্তি হয়েছিল। তারা পালিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিয়মিতভাবে তারা একত্র হতেন জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসানের কলকাতাস্থ অস্থায়ী বাসায়। লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীদের এই আড্ডায় উপস্থিত থাকতেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সাহাও। নিয়মিত উপস্থিত থেকে থেকে দেশের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে তাদেরকে উৎসাহ দিতেন। নির্বাসিত এই লেখকদের বই প্রকাশ করার দায়িত্ব তিনি নিজেই নিলেন। সে সময় চিত্তরঞ্জন সাহার ভূমিকায় এবং অন্যান্যদের সহায়তায়স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ নামে কলকাতায় একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।[1] এই সংস্থাটিই পরবর্তীতে মুক্তধারা প্রকাশনীতে পরিণত হয়।[2] স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ থেকে তখন ধীরে ধীরে তাদের বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়।

read more »