মূল লেখার লিংক
অনেকেই পারেন খুব সাধারণ জিনিস থেকে অসাধারণ কিছু আইডিয়া বের করে ফেলতে। ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা এলেক্স জ্যারেট তেমন একজন মানুষ। জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম আমরা অনেকেই ব্যবহার করি- আমাদের গাড়িতে বা ফোন বা অনেকের ঘড়িতেই এই জিপিএস আছে। কিন্তু আমরা কেউ হয়তো এটা নিয়ে কখনো তেমন ভাবিনি। এলেক্সের হাতে ১৯৯৬ সালে যখন এই জিপিএস যন্ত্র এলো তখন তার মাথায় আসলো একে ভ্রমণের জন্য কীভাবে আরো বেশি কাজে লাগানো যায়। ছোটবেলা থেকে তার দুর্বলতা ছিলো অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ যেসব পূর্ণ সংখ্যা বা ডিগ্রিতে প্রকাশ করা হয় সেই সংখ্যাগুলোর ওপর যেমন- 43°00’00″N 72°00’00″W। তাই সে চিন্তা করলো জিপিএস ব্যবহার করে এই স্থানগুলো ভ্রমণ করলে নিশ্চয়ই দারুণ একটা ব্যাপার হবে।
ভ্রমণ/ফটোগ্রাফি প্রজেক্টঃ দ্য ডিগ্রি কনফ্লুয়েন্স
তোতা কাহিনী – সৈয়দ মুজতবা আলী
মূল লেখার লিংক
ইরান দেশের এক সওদাগরের ছিল একটি ভারতীয় তোতা। সে তোতা জ্ঞানে বৃহস্পতি, রসে কালিদাস, সৌন্দর্যে রুডলফ ভেলেন্টিনো, পাণ্ডিত্যে ম্যাক্সম্যুলার। সওদাগর তাই ফুরসত পেলেই সেই তোতার সঙ্গে দু-দণ্ড রসালাপ, তত্ত্বালোচনা করে নিতেন।
হঠাত্ একদিন সওদাগর খবর পেলেন ভারতবর্ষে কার্পেট বিক্রি হচ্ছে আক্রা দরে। তখনই মনস্থির করে ফেললেন ভারতে যাবেন কার্পেট বেচতে। জোগাড়-যন্ত্র তদ্দণ্ডেই হয়ে গেল। সর্বশেষে গোষ্ঠীকুটুমকে জিজ্ঞেস করলেন, কার জন্য হিন্দুস্তান থেকে কী সওদা নিয়ে আসবেন। তোতাও বাদ পড়ল না—তাকেও শুধালেন সে কী সওগাত চায়। তোতা বলল, ‘হুজুর, যদিও আপনার সঙ্গে আমার বেরাদরি, ইয়ারগিরি বহু বত্সরের, তবু খাঁচা থেকে মুক্তি চায় না কোন চিড়িয়া? হিন্দুস্তানে আমার জাতভাই কারোর সঙ্গে যদি দেখা হয় তবে আমার এ অবস্থার বর্ণনা করে মুক্তির উপায়টা জেনে নেবেন কি? আর তার প্রতিকূল ব্যবস্থাও যখন আপনি করতে পারবেন, তখন এ সওগাতটা চাওয়া তো কিছু অন্যায়ও নয়।’
এই সময়ের সবচে ভয়ঙ্কর তথ্য!
মূল লেখার লিংক
এই সময়ের সবচে ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে কীভাবে একটি মিউট্যান্ট H5N1 ভাইরাস বানিয়ে ফেলা যায়। যেটা্ বাতাসের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে দুনিয়াকে একেবারে নরক বানিয়ে দিতে পারে! কিন্তু সেই রেসিপি দেয়ার আগে ভাইরাস এবং ভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ক একটুখানি তথ্য দিয় শুরু করি। এই তথ্যটুকু জানা থাকলে এই লেখাটি বুঝতে সুবিধা হবে বলে মনে হয়।
ভাইরাস কী?
– ভাইরাস শব্দটির মানে হচ্ছে বিষ। প্রোটিনের ঠোঙায় মুড়ে রাখা কিছু জেনেটিক পদার্থ (ডিএনএ অথবা আরএনএ) ভাইরাস তৈরি করে। ভাইরাস নিজে প্রাণ নয়। কিন্তু সে প্রাণিকোষের উপাদান ব্যবহার করে নতুন ভাইরাস তৈরি করতে পারে।
ভাইরাস মাত্রই কি সংক্রামক?
– হ্যাঁ। ভাইরাস নিজে নিজে বংশবিস্তার করতে (নিজেকে সংখ্যায় বাড়িয়ে নিতে) পারেনা। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তাকে সংক্রামক হতে হয়।
প্রিয় মুখ ৪ – ও ক্যাপ্টেন, মাই ক্যাপ্টেন
প্রিয় বিদ্রোহী কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান একটি কবিতা লিখেছিলেন, আব্রাহাম লিঙ্কনের মৃত্যুর পর তাকে উদ্দেশ্য করে, যার শিরোনাম ছিল ও ক্যাপ্টেন, মাই ক্যাপ্টেন (কবিতাটি লেখার শেষে যোগ করে দিলাম) এই শব্দগুলি আমার কানে আসলেই সবার আগে দুইটি মুখ মনের পর্দায় ভেসে ওঠে, যাদের আমার জীবনের কাপ্তান মনে হয়, আমার একার না, সমগ্র মানবজাতির, তারাই যেন সত্যিকারের কাণ্ডারি, ঘোর তমনিশা পেরিয়ে মানবসমাজকে নিয়ে যান তারা আলো ভরা গন্তব্যের দিকে।
যখন আব্বা মারা গেল, তখন বুঝলাম, আমি কি হারিয়েছি
মূল লেখার লিংক
৬ বছর আগের কথা। তখন ফুটবল বিশ্বকাপের সময়। ফুটবল উপলক্ষ্যে যথারীতি ক্যাম্পাসে একটা হট্টগোল, অতঃপর পরীক্ষা স্হগিত। সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হয়েছিলাম আমরা, যাদের ঐ একটা পরীক্ষার জন্য সার্টিফিকেট আটকে গেল।
হলে ছিলাম, ২-১টা টিউশনি করাতাম, তাই লম্বা বন্ধের মাঝেও বাড়ি যাওয়া হয় নাই ছাত্রের পরীক্ষার কারণে। কিন্তু একদিন বাড়ী থেকে ফোন আসল, আব্বার শরীর ভালো নয়, পরীক্ষার আগে এসে একবার ঘুরে যাও। বাড়ীতে গেলাম, ২ দিন ছিলাম। ফুটবল খেলা দেখা, ভাই বোনদের সাথে গল্প করা এই সবে ২ দিন কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। ঢাকায় চলে আসলাম রাতের বাসে। সারারাত ঘুম হলো না ঠিক মতো।
সকালে এসে ঘুম দিলাম, বিকালে টিউশনিতে গেলাম। রাত ৯ টার দিকে হলে ফেরত আসলাম। একটু পরে আবার বড় আপার ফোন, ” আব্বার শরীর খারাপ, তুমি চলে এসো।” রাতে খেয়ে ১০টার দিকে ফকিরাপুলে চলে গেলাম তাড়াতাড়ি, বাসের টিকেট পেলাম রাত ১১.৩০ এর দিকে। কাউন্টারে বসে আসি। আবার আপার ফোন এল, ” তুমি কি টিকেট করেছো? তুমি কি বাড়ি আসছো? আব্বার শরীর অনেক খারাপ, এখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে, তুমি যত তাড়াতাড়ি পারো চলে এসো।”
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট – আমরা নিকটে গিয়ে শত্রুকে ধ্বংস করি
মূল লেখার লিংক
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অধীনে থাকা বাঙ্গালী সেনা তথা ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবদান ছিল অবিস্মরণীয় । পূর্ব-পাকিস্তান বাঙালীদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রেক্ষিতে দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে গঠন করা হয় “ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট(EBR)”। উল্লেখ্য, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যান্য অনেক ভাগে বাঙ্গালী সেনারা থাকলেও বিপুল আকারে এবং সম্পূর্ণ বাঙ্গালিদের নিয়ে গঠিত পূর্ণ-শক্তির বাহিনী ছিল ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্ট। যদিও সত্তরের দিকে এই ইস্ট-বেঙ্গালের সেনাদের মধ্যে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উপস্থিতি দেখে, তা রোধ করতে ফ্রন্টিয়ার-ফোর্সের কিছু সেনাকে আস্তে আস্তে ইস্ট-বেঙ্গলের সেনাদের সাথে মিশিয়ে দেবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়, যা কখনোই আলো দেখেনি পুরোপুরি।1
পাঞ্জাব, বালুচ, বিহার জনগোষ্ঠীর সেনাসংখ্যা যতটা ছিল, তার তুলনায় বাঙ্গালী রেজিমেন্টের সংখ্যা ছিল একেবারেই অপ্রতুল। প্রথম দিকে শুধু একটি ব্যাটেলিয়ন থাকলেও পরবর্তীতে ব্যাটেলিয়ন সংখ্যা উন্নীত করা হয় আটে। ১ম ইস্ট বেঙ্গলকে বলা হত সিনিয়র টাইগার। বাছাই করা চৌকশ বাঙ্গালী সেনা এবং ওসমাণীর ছায়াতে থাকা এই রেজিমেন্ট অচিরেই পরিণত হয় পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটেলিয়নে।
স্টেইটস্ অব আর্টঃ কলাম্বাস, ওহাইও
মূল লেখার লিংক
ইংরেজী weather শব্দটার সাথে আমাদের খুব করে পরিচয় থাকলেও অনেকটা একই উচ্চারণের wether এর সাথে তেমনটা নেই। থাকার কথাও নয়। তার উপর সেটার অর্থ যদি হয় একটি খাসি করা মেষ বা ভেড়া (A castrated ram), তাহলেতো কথাই নেই। তাছাড়া, চরানোর ব্যাপার না আসলে মেষ ব্যাপারটা আমাদের দেশে খুব একটা ব্যবহারও করতে হয় না। বাংলায় বাবারা অকর্মণ্য ছেলেকে মেষ চরানোর পরামর্শ দিয়ে মনের ক্ষোভ মেটান। আর মেষ না বলে যদি ভেড়া বলা হয়, তাহলে সেটার ব্যবহারও সদ্য বিবাহিত কাউকে বিয়ের পর ভেড়া হয়ে গেছে বলে উত্তক্ত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তবে, সকল অপমান মুখ বুজে সহ্য করে চলতে থাকা ভেড়া সমাজেও একজন অত্যন্ত সন্মানিত ভেড়া আছেন। এই নেতৃস্থানীয় ভেড়াটির (wether) গলায় ক্ষেত্রবিশেষে একটি ঘণ্টা (bell) ঝুলিয়ে দেয়ার কারণে, ইংরেজীতে এর নাম হয়ে যায় bellwether। বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা বিশেষ কাজ হিসেবে বিবেচিত হলেও, এই ভেড়াদের গলায় ঘণ্টা বাঁধা কাজের মধ্যেই ধরা হবে না। বুদ্ধি বিবেচনা এবং দুটি চোখ থাকা সত্ত্বেও, নেতৃত্বের প্রতি অগাধ বিশ্বাসী এই নিরীহ প্রাণীগুলো, পথ চলার সময় কেন যে সে-সবের বিন্দুমাত্র ব্যবহারও না করে তাদের নেতা bellwether কে অনুসরণ করে সামনে এগিয়ে চলে, সেটা গবেষণার বিষয়ই বটে। তবে, কারণ সে যাই হোক না কেন, তাদের এই ভক্তিমূলক অনুসরণ প্রক্রিয়াটাকে সহজতর করাই bellwether এর গলায় ঘণ্টার ঝুলানোর মূল কারণ। গলায় ঝুলতে থাকা ঘণ্টার ধ্বণি শুনেই, দলনেতাকে অনুসরণ করে এগিয়ে চলে সমস্ত ভেড়ার পাল। তাছাড়া, সমস্ত পাল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে যিনি থাকেন, সেই নিয়ন্ত্রণকর্তারও বুঝতে সুবিধে হয় ভেড়ার পালটি সে-মুহূর্তে ঠিক কোথায় বা কোনদিকে আছে।